ফাইলচিত্র।
ডনবেঙ্গল ডেস্ক : দেশে যখন ইসলামাতঙ্ক তুঙ্গে তখন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ২০ বছর বয়সী পড়ুয়াকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়া হল না। পরিবর্তে বলা হল এএমইউয়ের বোর্ড অফ সেকেন্ডারি ও সিনিয়র সেকেন্ডারি এডুকেশন 'অনুমোদনপ্রাপ্ত' নয়। এএমইউ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন এবং আর্মি রিক্রুটমেন্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় নথিপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভিসি লেফটেনান্ট জেনারেল জামিরুদ্দিন শাহ বলেছেন, দেশের প্রথম সারির একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যা সারা বিশ্বে পরিচিত তার প্রতি 'গা-ছাড়া মনোভাব' দেখানো হয়েছে। গত বছর ডিসেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপনে মূল ভাষণ দিয়েছেন।
রাজস্থানে হওয়া আর্মি রিক্রুটমেন্ট শিবিরে যে সকল এএমইউয়ের পড়ুয়া অংশগ্রহণ করেছিলেন তাঁদের বাতিল করে দেওয়া হয়। উত্তরপ্রদেশ সরকারের জারি করা রাজ্য-অনুমোদিত যে বোর্ডের তালিকা তাতে নাম নেই আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি বোর্ড অফ সেকেন্ডারি অ্যান্ড সিনিয়র সেকেন্ডারি এডুকেশনের। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের পড়ুয়া মুরসালিম খান জানিয়েছেন, তিনি আর্মি রিক্রুটমেন্ট ড্রাইভে শারীরিক পরীক্ষায় পাশ করলেও ২৯ জুলাই তাঁর নামে বাতিলপত্র আসে। সেই চিঠিতে জানানো হয়েছে যে, তাঁর বোর্ড 'অননুমোদিত'। এই রিক্রুটমেন্ট ড্রাইভের সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিক জানালেন, জানুয়ারি মাসে আর্মি হেডকোয়ার্টারে প্রতিটি রাজ্য বোর্ডের যে তালিকা পাঠিয়েছে তাতে এই বোর্ডের নাম নেই।
যাইহোক, এই দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়ে এএমইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত স্কুলগুলি স্বীকৃত ও বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান দ্বারা অনুমোদনপ্রাপ্ত। এক পড়ুয়ার প্রশ্ন, সেনা কর্তৃপক্ষ কি জানে না যে এএমইউয়ের শতবর্ষ উদযাপনে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভাষণ দিয়েছেন ? বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছে ১০টি স্কুল। প্রায় ২৯০০ পড়ুয়া। এই বোর্ডে প্রতি বছর ১২টি পরীক্ষা হয়। এই স্কুলগুলি স্থাপিত হয়েছে ১৯২০ সালের এএমইউ আইনের ১২(১) ও (২) ধারায়। তাছাড়া, সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলগুলি (ছাত্র/ছাত্রী) ইউজিসি লেটার নং এফ.২-৫৪/৮২(ডি-১) দ্বারা ১৯৮৪ সালের ২ মে তারিখে স্বীকৃত ও অনুমোদনপ্রাপ্ত।
সৈয়দ হামিদ সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের অধ্যক্ষ মেজর সৈয়দ মহম্মদ মুস্তাফা বলেন, এটি গুরুতর বিষয়। এ ব্যাপারে সরকারের নজর দেওয়া দরকার। এই বোর্ডের ইস্যু করা শংসাপত্র ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি দ্বারা স্বীকৃত এবং এই বোর্ডের পড়ুয়ারা দেশের প্রথম সারির প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলিতে শীর্ষ স্থান দখল করে আসছে। এই বোর্ড কীভাবে অননুমোদিত হতে পারে ? বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র ওমর পীরজাদা বলেন, এই বিতর্কের কোনও সত্যতা নেই। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত স্কুলই বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের দ্বারা যথাযথভাবে স্বীকৃত এবং এদের ফলাফল প্রতি বছর শিক্ষা মন্ত্রকে পাঠানো হয়। তিনি আরও বলেন, যথাযোগ্য স্তরে বিষয়টি উত্থাপন করা হচ্ছে। আর্মি রিক্রুটমেন্ট কতৃপক্ষকে সমস্ত প্রাসঙ্গিক নথি পাঠানো হয়েছে। এই নথির একটি কপি অভিযোগকারী পড়ুয়াকেও দেওয়া হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি হবে।
Comentarios